হুক্কা বেশ কয়েক বছর ধরে রাজধানী ঢাকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। অনেকেই মনে করেন, ধূমপানের চেয়ে হুক্কা বা সীসা গ্রহণ বেশ নিরাপদ। কিন্তু এই ধরনের ধারণাকে একেবারেই ভ্রান্ত ধারণা হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা।
চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের দাবি, হুক্কা গ্রহণ কখনোই ঝুঁকিমুক্ত ছিল না। ধূমপানের চেয়ে দ্রুতগতিতে ক্যানসার তৈরি করতে পারে হুক্কা।
ভারতের দিল্লির কার্ডিওলজিস্ট আমর সিং বলেন, ‘হুক্কার ধোঁয়া অধূমপায়ীদের মধ্যেও স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। তামাক থেকে ধোঁয়া তৈরি হয়, আবার হুক্কা থেকেও ধোঁয়া তৈরি হয়। হুক্কা গ্রহণ করার সময় খুব অল্প সময়ে প্রচুর ধোঁয়া আমাদের শ্বাসনালীর মাধ্যমে ভেতরে প্রবেশ করে। এই ধরনের ধোঁয়া আমাদের ফুসফুসের প্রচণ্ড মাত্রায় ক্ষতি করে। তাছাড়া, শাঁ শাঁ শব্দ করে নিঃশ্বাস নেয়া, মস্তিষ্কের ঝিল্লি প্রদাহ, তীব্র ব্রঙ্কাইটিস সমস্যা তৈরি করে।’
ভারতের রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) উল্লেখ করেছে, এক ঘণ্টায় হুক্কা সেবনের সময় কমপক্ষে ২০০ বার ফুঁকা হয়। আর এক ঘন্টা ধূমপানে ২০ বার ফুঁকা হয়।
চিকিৎসকরা বলেছেন, ধূমপানের মতো হুক্কা গ্রহণে মুখের ক্যানসার, ফুসফুস ক্যানসার, পাকস্থলী ক্যানসার, খাদ্যনালীর ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তাছাড়া, ফুসফুসের কার্যাবলী এবং প্রজনন ক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে হুক্কা। অধিকাংশ রোগীদের শ্বাস নেয়ার সময় বুকে ব্যথা এবং হুক্কার ধোঁয়ার কারণে কফের রঙ বদলে যেতে পারে।
মনোবিজ্ঞানী সুধীর খানদেওয়াল বলেন, ‘তামাক জাতীয় যেকোনো পণ্য যেমন- হুক্কা, সিগারেট, পান একই ধরনের ক্ষতি করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি সিগারেটের সঙ্গে তুলনা করলে হুক্কার ধোঁয়ায় উচ্চ মাত্রায় আর্সেনিক, সীসা এবং নিকেল ধাতু রয়েছে। এটি সিগারেটের চেয়ে ৩৬ গুণ বেশি আলকাতরা বা পিচ এবং ১৫ গুণ বেশি কার্বন মনোঅক্সাইড নির্গত করে। এর চিকিৎসার জন্য দীর্ঘমেয়াদি এবং কঠিন ওষুধ প্রয়োজন হয়।’ সূত্র: ডেকান ক্রনিক্যাল।