এখন মানুষ নগরমুখী, শহরমুখী হয়েছে। পণ্যের সম্ভার এতই বেড়েছে যে, এখন আর এক জায়গায় বহু লোক একসঙ্গে মিলে নিজেদের প্রয়োজন মেটাবে, নিজেদের মধ্যে মেশামেশি করবে, যেসব জিনিস পেতে গেলে শহরে যেতে হবে সেসব জিনিস মেলায় এসে পেয়ে যাবে, নানা রকম আনন্দ-ফুর্তির ব্যবস্থা করা হবেÑ এই ঐতিহ্য তো আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে। যা হারিয়ে যাচ্ছে তা-ই বোধহয় ঐতিহ্যের অংশ হয়ে যাচ্ছে। কারণ ঐতিহ্য মানেই হচ্ছে যেখানে অনেক পুরনো আনন্দের স্মৃতির একটা মেলা জমা হয়ে থাকে এবং সে জন্য এসব জমায়েতে নানা জায়গা থেকে মানুষ আসে। প্রয়োজনে আসে, অপ্রয়োজনেও আসে। মেলাটা হয়ত কোনো একটা উপলক্ষ্য ধরে হয়। যেমন চৈত্রসংক্রান্তির মেলা হতো আমাদের এলাকায় একটি নির্দিষ্ট জায়গায়। এই মেলার অনেক পুরনো কিংবদন্তি আছে, অনেক অনেক ইতিহাস আছে। আমি সেই ইতিহাস-কিংবদন্তির মধ্যে যদি নাও যাই, তাও বর্তমানের ছেলেমেয়েদের কাছে পরিচিত বলে মনে হবে না। কারণ সেই কালটা বিগত হয়ে গেছে। আর বিগত বলেই তা ঐতিহ্যের অংশ, ঐতিহ্যের অঙ্গ হয়ে গেছে।
মাঝে মধ্যে আমরা স্মৃতির জাবর কাটি। গরু যেমন এক পাকস্থলি থেকে আরেক পাকস্থলিতে খাবার নিয়ে আসার জন্য জাবর কাটে, তেমনি আমাদের মধ্যে যাদের বয়স হয়েছে তাদেরও স্মৃতি নিয়ে জাবর কাটতে ইচ্ছে করে। এসব স্মৃতির জাবর যারা শোনে বা পড়ে তাদের মনে যে সবসময় দাগ কাটে এমন নয়। দাগ কাটার মতো হয়ত তাদের অন্য রকমের আমোদ আছে। যেমন কম্পিউটার আছে, কম্পিউটার গেইম আছে, ইন্টারনেটে মনে দাগ কাটার মতো নানা জিনিস আছে। তথ্যপ্রযুক্তি এখন কত উন্নত। ইন্টারনেট তো নানা জিনিসের সমাহার। চাইলেই যেকোনো কিছু সহজেই মিলে যাচ্ছে। কম্পিউটার ইন্টারনেট ঘাঁটাঘাঁটি করলে গোটা বিশ্ব তাদের সামনে চলে আসছে। এ সবেই হয়ত তাদের মনোযোগ সম্পূর্ণ দখল করে নিয়েছে।
একদিক থেকে এটাই তো যথেষ্ট। তবু আমার মনে হয় মানবশিশু এবং সাধারণভাবে মানুষ আসলে গল্প শুনতেই বেশি পছন্দ করে। ইন্টারনেট বা কম্পিউটার দিয়ে তাকে স্থানচ্যুত বা ইচ্ছাচ্যুত করা যাবে বলে আমার মনে হয় না। ওই যে গল্প, একজন রাখাল ছিল, বিনা কারণে সে বাঘ বাঘ বলে চিৎকার করত মাঠে গরুর পাল নিয়ে গিয়ে। হন্তদন্ত হয়ে গাঁয়ের লোকরা ছুটত। তখন সে ধোঁকা দিয়েছে এই ভেবে দাঁত বার করে হাসত। সত্যি একদিন বাঘ এলো। সেদিন সে খুব বাঘ বাঘ করে চিৎকার করল, কিন্তু কেউ আর তাকে বাঁচাতে এলো না। রাখাল বাঘের পেটে গেল, গরুগুলোর কী হলো, সেটা আর গল্পে বলা গেল না। এত পুরনো গল্প, অথচ এই গল্প হয়ত এখনো শিশুদের ভালো লাগবে। সে জন্য আমার বাল্যকালের স্মৃতি যা আছে তা থেকে আমার মনে হয়, আমি একবার স্মৃতির ঝাঁপিটা খুলি, আমার চারপাশে এখনো শিশু-কিশোররা বসে যাবে এবং আমার গল্প খুব আগ্রহ নিয়েই শুনতে থাকবে।
অন্য কথা বাদ দিয়ে এখন না হয় মেলার কথাটাই বলি। আমার সেই শৈশবের মেলা ছিল সেটি। মেলা কেন? মেলা কেন হতো? কারণ তো নিশ্চয়ই ছিল। কিন্তু সেটা এত কেজো কারণ যে, বলতে গেলে তেমন কারো ভালো লাগবে না। এখন যেমন সব রকমের দরকারি-অদরকারি জিনিস উপচে পড়ছে বাজারে, সেখানে আমি যে সময়কার কথা বলছি, শুনে হয়ত ভালো নাও লাগতে পারে। ভাবতে গেলে বলতে হয়, তখন গ্রামগুলো আসলে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার চেষ্টা করত। কিন্তু হতে তো পারত না। এখন বাজারে গেলেই মাটির খোঁড়ার একটি যন্ত্র কিনে আনা যায়, খুব সহজেই একটা কোদাল কিনে আনা যায়। এখন একটা যন্ত্র দিয়ে চাষবাস করা যায়, গরু-মোষের কোনো দরকার নেই। ধানের একটা করে গোছা কেটে আলাদা করার দরকার নেই এখন আর, এখন যন্ত্র দিয়েই কাটা যায়। আবার যন্ত্র দিয়েই ঝাড়াই করা যায়। মানুষকে দিয়ে পিটিয়ে ধান ঝাড়াই করতে হয় না। এটা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অবশ্য সুবিধার কথা। কিন্তু অসুবিধার মধ্যে যে আনন্দ আছে সেটা জানতে গেলে পুরনো দিনে ফিরে যেতে হবে।
আমাদের শৈশব-কৈশোরে সব গাঁয়েই যে কামার ছিল তা নয়। সব গাঁয়েই যে কুমোর থাকত তাও কিন্তু নয়। আবার সব গাঁয়েই যে কাঠমিস্ত্রি থাকত তাও নয়। অথচ কৃষিভিত্তিক সমাজ তো, কামার-কুমোর বা কাঠমিস্ত্রির দরকার হয়। লাঙলের জন্য ফাল দরকার হয়, কারণ তখন তো যান্ত্রিক লাঙল ছিল না। কাজেই লাঙল তৈরি করতে গেলে একটি বিশেষ ধরনের গাছের কাঠ লাগবে। সাধারণত বাবলা কাঠ। এটি দিয়ে গরুর গাড়ির চাকাও তৈরি করা যায়। এগুলো করার জন্য কামারের দরকার। সে লাঙলের ফাল তৈরি করছে, বাড়িতে যে ছুরিটা আছে সেটাকে শানিয়ে দিচ্ছে, লোহা পুড়িয়ে গনগনে লাল করে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে আবার তাকে গরম করছে, আবার হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে চ্যাপ্টা করছে। এভাবে একবার পানিতে, একবার আগুনে দিয়ে তারপর হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে লাঙলের ফালের চেহারাটা দিচ্ছে। কিংবা বঁটি তৈরি করা হচ্ছে অথবা দা-কাটারি তৈরি করা হচ্ছে, কোদাল তৈরি করা হচ্ছে। এগুলো তো সবারই দরকার। কিন্তু যে গাঁয়ে কামার নেই সেই গাঁয়ের লোকেরা এসব জিনিস কী করে পাবে? কিংবা গরুর গাড়ির চাকাই বা কোত্থেকে পাবে তারা?
তার মানে তখন এমন একটা ব্যবস্থা ছিল যে, এভাবে লেনদেন না করলে জীবন অসম্ভব ছিল। মানুষকে মানুষের গায়ে সেঁটে লেগে থাকতে হতো। মানুষের উষ্ণ সংস্পর্শ তখন পাওয়া যেত। বিরোধ, বিদ্বেষ তাও তো কাজ করত। কোথায় কোনো মেলা হলে কামার-কুমোর বা অন্যান্য পেশাজীবীর সব দ্রব্যসম্ভার, যা সবার দরকার, একটা কৃষি সমাজের জন্য যা প্রয়োজন, শেষ পর্যন্ত মেলায় এনে রাখা হতো মেলার একটা অংশে। এত লোক এসেছে নানা গ্রাম থেকে, কাজেই একটা নাগরদোলার ব্যবস্থা তো থাকবেই। শিশুরা আছে, কাজেই স্কুল থেকে ঘোষণা করা হবে খানিক পরে পরে যে, এখানে দুধ রাখা হয়েছে। যদি কোনো মায়ের বা বাবার তার বাচ্চার জন্য দুধ প্রয়োজন হয় তাহলে নিয়ে যান। দু-টুকরো বাঁশ দিয়ে বাঁশি বানানো হতো। শিশুদের বাঁশির শব্দে মেলার প্রাঙ্গণ ভরে যেত। এই শব্দটা শুনলেই বোঝা যেত এখানে মেলা হচ্ছে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস যেমন কিনে নেয়া যেত মেলা থেকে, পরস্পরের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ কথাবার্তা মেশামেশিÑ এগুলো আপনা-আপনি ঘটে যেত। শখ করে কেউ ছবি তোলাতে চায়। সাময়িকভাবে একটা স্টুডিও আছে মেলার এক কোণায়। বন্ধু-বান্ধবরা আসত মেলায়। লেখাপড়া না জানা বন্ধু। অদ্ভুত পোশাক পরে কোনো একটা স্টুডিওতে যেত। স্টুডিও চিনবার উপায় ছিল তিনদিকে কালো কাপড়ের দেয়াল। ভেতরে গেলে বসার জায়গা এবং ছবি তোলা। একদিন পরে গিয়ে ছবি নিয়ে আসতে হতো। সাদা কালো ছবি।
জাদুঘর বলে একটা জায়গা আছে জাদু দেখানোর জন্য। জাদুঘরটাতে একটা আয়নার এমন কায়দা করে লাগানো হতো যে, একটা ছেলের দুটো মাথা দেখা যেত। বাইরে অদ্ভুত পোশাক পরে ড্রাম বাজিয়ে একটা লোক বলত, ‘এই দেখে যান, দেখে যান, একটা ছেলের দুটো মাথা।’
পাশে একটা ফাঁকা মাঠে সার্কাস এসেছে। সার্কাসে বাঘ থাকত। আমি ছটা বাঘ একসঙ্গে দেখেছি সার্কাসে। বেশ ভালো শিক্ষা পাওয়া গাধা আছে। তারের উপর দিয়ে হাঁটতে পারে এ রকম ছাগল আছে একটা। আরও কত রকমের খেলা তো আছেই। সব খেলায় পারদর্শী হচ্ছে সঙ। সে সব কিছুতে ওস্তাদ। সব কিছু দেখাত লোক হাসানোর জন্য।
এমন নানা রকমের আকর্ষণ মেলায় থাকত। উপলক্ষ হয়ত কোনো এক ঠাকুর বা দেবতা অথবা কোনো দেবী। তাকে উপলক্ষ করেই পুরো মেলা। মেলার চতুর্দিকে সত্তর-আশি-নব্বই বা এক শ গ্রাম থেকে মানুষ বলির পাঁঠা নিয়ে আসছে। নারী-শিশু-পুুরুষ সবাই। কেউ মানত করেছে মেলায় এসে একটা কচি শিশুর চুল দেয়ার জন্য। শিশুর ঝাকড় চুল নিয়ে মেলায় এনে কামানো হচ্ছে। কেউ একটা পাঁঠা বলি দানের মানত করেছে, সে পাঁঠা বলি দিচ্ছে। আমি যে মেলার কথা বলছি সেই মেলাতে অন্তত এক হাজার পাঁঠা বলিদান করা হতো। কামার যে আছে সে প্রচ- মদ খেয়েছে, সেই সঙ্গে গাঁজাও খেয়েছে। দড়ি ধরে টেনে পুকুরে নিয়ে গিয়ে পাঁঠাটাকে পানিতে চুবিতে নিয়ে এসে গাছতলায় কামারের সামনে আনা হতো, যেখানে বলিদানের ব্যবস্থা আছে। সেখানে পাঁঠা বলি দেয়া হচ্ছে। খাঁড়া পড়ছে পাঁঠার গলায়, এক মুহূর্তে মু-ুটা আলাদা হয়ে যাচ্ছে। মু-ুর মালিক হলো কামার নিজে। কাজেই সে যতটা পারত ঘাড় রেখে দিয়ে কোপাত।
চৈত্রসংক্রান্তির দিনে মেলাটা শুরু হবে। লাঙল আর ষাঁড়Ñএ নিয়ে সেদিন মাঠে নামা হবে। লাঙল নতুন। ষাঁড়ও নতুন এবং একেবারে আবর। হাজার হাজার লোক পিছু পিছু দৌড়াচ্ছে। ষাঁড় দুটো লাঙল নিয়ে সারা মাঠে দৌড়ে বেড়াচ্ছে। লাঙল কোনো মাঠে পড়ছে, কোনো মাঠে পড়ছে না। ওদিকে বিরাট মাঠ পার হয়ে বর্ধমানের মহারাজার বুড়ো হাতি আসছে। সে এসে এমন করে দাঁড়িয়ে আছে, দূর থেকে দেখে মনে হচ্ছে আকাশের কোণে খানিকটা মেঘ জমেছে। তাকে একটা কলা দিলেই মাহুত বলত, ‘কুক দে কুক দে।’ অর্থাৎ হাতিটা কুউক করে শব্দ করবে। কলাটা যে দেয়া হলো তার পুরস্কার। মাটিতে একটা পয়সা ফেলে দিলে হাতিটা শুঁড় দিয়ে পয়সাটা তুলতে পারত। তুলে মাহুতের হাতে দিত। যে পয়সা দিত তাকে শুঁড় তুলে সালাম করত।
প্রচুর পরিমাণে নতুন ফল আসত মেলায়। আম, লিচু, কাঁঠাল, কলা, তালের কচি ডাবÑ এগুলো মেলার গোড়াতেই থাকত। তারপর একটা দ্রব্যের দোকানের পর মিষ্টির দোকানের সারি। সবচেয়ে ভালো মিষ্টি যেখানে তৈরি হয় সেখানকার মালিক এবং কারিগররা এসে মেলায় দোকান বসাত। বর্ধমানের বিভিন্ন জায়গা থেকে তারা আসত। গাঙপুরের ল্যাংটা অত্যন্ত বিখ্যাত মিষ্টি ছিল, মেলায় আনা হতো। মিষ্টির দোকানে শুধু যে ল্যাংটা তা নয়, সব ধরনের মিষ্টি পাওয়া যেতে। বিশুদ্ধ ছানার বিরাট বিরাট রাজভোগ, রসগোল্লা, চমৎকার সব সন্দেশ ইত্যাদির দোকানও বসত।
মেলার সময় মেয়েরা বাবার বাড়ি আসত, জামাইরা আসত শ্বশুরবাড়ি। জামাইকে নিয়ে মেলায় আসা একটা ছল, না এলে নিন্দা হবে। এবং জামাইকে অবশ্যই মেলায় নিয়ে যেতে হবে। প্রচুর পরিমাণে মিষ্টি খাওয়াতে হবে।
মেলায় আমাদের জন্য প্রধান আকর্ষণ ছিল মনোহারী দোকানগুলো। আমার একটা ছুরির যে কী শখ ছিল, ওই এক দিকে একটা ফলা থাকলেই হবে, দুটো ফলাঅলা ছুরি না হলেও চলবে, কিন্তু কেউ কিনে দিত না। মায়ের কাছে ধরনা দিতাম, ফুপুর কাছে ধরনা দিতাম। সারা দিনের চেষ্টার পর হয়ত বিকেলের দিকে এক পয়সা বা দু পয়সা দিল। মেলা তো সত্যিকারে জমত দ্বিতীয় বা তৃতীয় দিনে। চলত প্রায় এক মাস ধরে। দোকানগুলোর সামনে আমি দাঁড়িয়ে থাকতাম ছুরির দিকে তাকিয়ে। আমার পকেটে চার আনা আছে, কিন্তু ছুরির দাম দশ আনা। ছুরিটা কিনতে পারছি না। বিফল মনোরথে বাড়ি ফিরে আসতাম সন্ধ্যায়। দশ আনা পয়সাও আমাদের জন্য কত কঠিন ছিল, যদিও আমাদের নিজেদের অবস্থা বেশ ভালোই ছিল। তার মানে দ্রব্যের সম্ভার আছে, কাঁচা টাকা নেই। নোটের প্রচল তখন প্রায় হয়নি।
মনোহারী দোকানে আরো নানা রকমের মনোমুগ্ধকর জিনিস পাওয়া যেত। বিলাস দ্রব্য, প্রসাধনী দ্রব্য, ফটকা, বেলুন ইত্যাদি পাওয়া যেত। বাঁশের বাঁশি একটা কিনতাম হয়ত। তারপর একটা ঝা-া লাগানো তালের পাতা, জোরে দৌড়ালে যেটা ভন ভন করে ঘুরত। সেটা হাতে নিয়ে দৌড়ালে পাখাটা ঘুরত, দাঁড়ালেই থেমে যেত। এসব অতিশয় সাধারণ জিনিস কত আনন্দের ছিল, কত দুষ্প্রাপ্য ছিল। যাবতীয় প্রয়োজনীয় জিনিস পাওয়ার জন্য আশপাশের গ্রামের সবাইকে আসতে হতো এখানে।
আমি যে মেলার কথা বলছি সেই মেলাতে ঠিক দুপুর বেলায় একটি মহিষ বলিদান হতো। মহিষ বলিদানও আমি দেখেছি। এক কোপেই কাটতে হতো। মহিষ কিন্তু পাঁঠার মতো করে বলি দেয়া হতো না। দড়ি দিয়ে গলাটাকে বেঁধে দুটো-তিনটা বাঁশ দিয়ে মহিষটাকে ঝুলিয়ে দেয়া হতো। ওর ঘাড়টাতে আচ্ছা করে ঘি মাখিয়ে দেয়া হতো। তারপর বিরাট একটা খাঁড়া পড়ত তার ঘাড়ে। খাঁড়ার ওজন বোধহয় কামারের চেয়েও বেশি।
যা হোক, মেলা প্রায় মাসখানেক চলত। সার্কাস চলত আরো কিছুদিন। তারপর একবার কেউ শূন্য মেলার জায়গাটায় যাক। কি দেখবে সে? একটা অসম্ভব শূন্যতা। পরের বছরের অপেক্ষা।