সিরামিক নিয়ে কাজ করছেন দুই যুগেরও বেশি সময়। সিরামিক নিয়ে ‘ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ’ নামের এক ভিন্ন রকম প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন গাজীপুরে। ‘ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ’-এর প্রতিষ্ঠাতা মো. নাসিমুল ইসলাম কথা বলেছেন নিজের প্রতিষ্ঠানের নানা বিষয় নিয়ে। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সৈয়দঋয়াদ ও তানজিলাপ্রিমা
কবেথেকেশুরুকরেছেন?
ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ শুরু করি আজ থেকে দুই বছর আগে।
আপনারএখানেকীধরনেরপ্রোডাক্টআউটলাইনরয়েছে?
সিরামিক শিল্পে এখন অনেক ধরনের প্রোডাক্ট তৈরি হচ্ছে। তবে তিন ধরনের প্রোডাক্ট সবাই উৎপাদন করে থাকে, এগুলোর মধ্যে ঘরের ব্যবহার্য কাচের সামগ্রী, টাইলস সামগ্রী ও টাইলস। আমরা মূলত থালাবাসনের মতো ঘরের নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী উৎপাদন করে থাকি। পাশাপাশি ইউনিক সিরামিক প্রোডাক্ট তৈরি করি, এর মধ্যে রয়েছে ফুলদানি, নানা রকম শোপিসও। মূলত আমরা ক্রেতার অর্ডার অনুসারে প্রোডাক্ট তৈরি করে দেই, সেজন্য অন্যদের চেয়ে প্রোডাক্টের ক্ষেত্রেও রয়েছে ভিন্নতা।
কিভাবেঅনুপ্রাণিতহলেন?
অনেক আগে থেকেই নিজে কিছু করার ইচ্ছে ছিল। আমার বাবাও চাইতেন আমি নিজে কিছু করি। তিনি নিজেও উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন, আর মাঝেমধ্যেও তার সেই ইচ্ছের বীজ বুনে গেছেন। তিনি সব সময় চাইতেন আমি এমন কিছু করি, যেন সেটা সবার চেয়ে ভিন্ন রকম কিছু হয়। এভাবেই নতুন কিছু করার বাসনা আমার মধ্যেও তৈরি হয়।
‘ব্র্যান্ডিংবাংলাদেশ’ এইনামটিকেন?
আমি দীর্ঘদিন আর্টিসান-এর সঙ্গে আছি। আর্টিসান-এর হেড অব এইচআর, এডমিন হিসেবে কাজ করছি। এখনো সেখানে আছি। এর পাশাপাশি এটি করেছি। এটি প্রতিষ্ঠা করার পেছনে একটি কারণ তো আছেই। বিদেশি কোম্পানিগুলো আমাদের দেশে ডিলারশিপ দিয়ে কাজ করায়, ফলে আমরা কাজ করলেও সেখানে লেখা থাকে না মেইড ইন বাংলাদেশ। আমরা কাজ করেছি অথচ নাম যাচ্ছে ওদের। এটা যেকোনো মানুষের জন্যই কষ্টের ব্যাপার, যদি কাজ করে নিজের নাম না থাকে। আর তার সঙ্গে বাড়তি প্রেরণা হলো কাজ করার পরও নিজের দেশের নাম না থাকার বিষয়টা। আমাদের সম্পর্কে বিদেশিদের যে নেতিবাচক ধারণা রয়েছে আমার প্রতিষ্ঠান ঠিক সে কারণেই ‘ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ’ নামকরণ করা হয়।
এবিষয়েকোনোপ্রশিক্ষণবাপূর্বঅভিজ্ঞতা?
বাইশ বছরেরও বেশি সময় সিরামিক নিয়ে কাজ করছি। কাজ করতে করতে অনেক কিছুই শিখেছি। আর তাই সেভাবে কোনো প্রশিক্ষণ নিতে হয়নি। কাজের অভিজ্ঞতাই আমার কাছে প্রশিক্ষণ।
শুরুতেকেমনসাড়াপেলেন?
অনেকদিন ধরে কাজ করছি। কাজের ক্ষেত্রগুলো সম্পর্কে নিজের অভিজ্ঞতা তো ছিলই। পাশাপাশি ব্যবসায়িক ধারণাও ছিল। সে করাণে শুরুতেই ভাল সাড়া পেতে থাকি।
আপনারএখানেকতজনশ্রমিককাজকরে?
এখন প্রায় ১৫ জনের মতো একটি গ্রুপ কাজ করছে। তবে মাঝেমধ্যে সংখ্যাটা বেড়ে যায়। বেশি কাজ থাকলে বাইরে থেকে শ্রমিক নিয়ে কাজ করতে হয়।
দেশীয় সিরামিক জাতীয় পণ্যের উন্নয়নে সরকার কি ধরনের উদ্যোগ নিতে পারে?
শুধু সিরামিক না, যেকোনো পণ্যের জন্য সরকারই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা এসব ক্ষেত্রে বিশেষভাবে প্রয়োজন। যেকোনো শিল্পের জন্য বিশেষায়িত শিল্পাঞ্চল প্রস্তুত করা প্রয়োজন। আমাদের দেশে বসতবাড়িকেই আমরা কারখানা হিসেবে ব্যবহার করি। আর এর জন্য সরকারকেই পদক্ষেপ নিতে হবে। উৎপাদনমুখী এসব খাতে সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করলে এই সেক্টরগুলো জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
প্রতিবন্ধকতা?
প্রতিবন্ধকতা তো আছেই। সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা গ্যাসের অপর্যাপ্ততার কারণে শিল্প-কারখানগুলো ঠিকভাবে উৎপাদন করতে পারছে না। শিল্প-কারখানায় উৎপাদনের জন্য গ্যাসের পর্যাপ্ত সরবরাহ বাড়াতে হবে।
ভবিষ্যৎপরিকল্পনা?
একটু একটু করে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে কাজ করার ইচ্ছে আছে। কাজের মধ্য দিয়েই এগিয়ে যেত চাই। যে উদ্দেশ্যে ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ-এর প্রতিষ্ঠা হয়েছে সেই লক্ষ এবং উদ্দেশ্যের দিকেই এগুতে চাই। আমার উদ্দেশ্য ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ। সাপ্তাহিক এইসময়-এর সৌজন্যে