রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র সুন্দরবনের জন্য হুমকি নয়: পরিবেশমন্ত্রী
বাগেরহাটের রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে সুন্দরবনের ক্ষতির আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। ম্যানগ্রোভ বনের ১৪ কিলোমিটারের মধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ নিয়ে উদ্বিগ্ন পরিবেশবিদ এবং বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পক্ষে যারা রয়েছেন, তাদের মধ্যে বিস্তর মতপার্থক্য রয়েছে। উভয় পক্ষই তাদের নিজ নিজ অবস্থানের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরছেন।
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে সরকারের চিন্তা-ভাবনা তুলে ধরতে ইংরেজি দৈনিক ‘দ্য ডেইলি স্টার’ পরিবেশমন্ত্রীর একটি সাক্ষৎকার প্রকাশ করেছে। ঢাকাটাইসের পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারটি অনুবাদ করেছেন জাকিয়া সুলতানা ।
প্রশ্ন: বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এমনিতেই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে সুন্দরবন। এর ওপর রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ এই ম্যানগ্রোভ বনের ক্ষতি আরও বাড়িয়ে দেবে না?
মন্ত্রী: সুন্দরবনের কাছে অনেক কারখানা ও স্থাপনা রয়েছে। যারা রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধিতা করছেন তাদের এবং সুশীল সমাজের কাছে আমার প্রশ্ন, তারা সেসব কারখানার বিরুদ্ধে কেন অবস্থান নিচ্ছেন না?
সুন্দরবনের জন্য আসল হুমকি হলো লবণাক্ততা, রামপাল নয়। আপনারা নিশ্চয় অবগত আছেন, ম্যানগ্রোভ বনে পরিষ্কার পানিপ্রবাহ বাড়াতে এর চারপাশের বিভিন্ন নদী খনন করেছে সরকার।
বাংলাদেশের মতো বিশ্বের প্রায় সব দেশই জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপতার শিকার। শুধু সুন্দরবন নয়, উত্তরবঙ্গও ক্ষতিগ্রস্ত। কয়লা বহনকারী যান সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে তো যাবে না।
সুন্দরবনের ক্ষতি হবে কি-হবে না এটি বোঝার জন্য প্রচুর গবেষণা হয়েছে। যদি সুন্দরবনের ক্ষতির আশঙ্কা থাকত তাহলে কোনো বাংলাদেশি এই প্রকল্পে রাজি হতো না।
প্রশ্ন: ইআইএর (এনভাইরনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট) দেয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়লা পরিবহনের কারণে পশুর নদী, সুন্দরবন এবং সেখানকার বন্য প্রাণী ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সে জন্য প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশও দেয়া হয়েছে। মন্ত্রী: সাগরে হাজার হাজার জাহাজ চলাচল করে। তখন কি সমুদ্র ও সামুদ্রিক প্রাণীর ক্ষতি হয় না? সমুদ্রের মধ্যে অনেক দ্বীপদেশ রয়েছে। তাহলে তো সেখানে থাকা জনগোষ্ঠী সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।
প্রশ্ন: সাগর ও সুন্দরবন কি সমান বিবেচিত হতে পারে? মন্ত্রী: এটা সমান। আমি বলতে চাইছি, সারা বিশ্বই ক্ষতিগ্রস্ত। আর সেজন্যই পরিবেশ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং সেখানে একটা মাত্রা নির্ধারিত হয়েছে। উন্নত দেশগুলো পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক কর্মকা- কমাতে পদক্ষেপ নিচ্ছে। সেই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উন্নয়নশীল দেশগুলোর ক্ষতির প্রভাব কমাতে সাহায্যের আশ্বাসও দিয়েছে।
এই প্রকল্প (রামপাল) ঘিরে আলোচনা-সমালোচনার দিকে আমাদের মনোযোগ রয়েছে। সরকার-প্রধান সেসব মন্তব্যকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবেন। কিন্তু একই সঙ্গে তাকে তো দেশের উন্নয়নও করতে হবে। শিল্পের উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির জন্য আমাদের নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রয়োজন। সুন্দরবনের যত ক্ষতিই হোক না কেন রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র হবেই, সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে এমনও নয়। সরকার-প্রধান এ বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি।
প্রশ্ন: তাহলে কি এমন যে সুন্দরবনের ক্ষতি হলে সরকার রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের স্থান পরিবর্তন করবে? মন্ত্রী: সরকার-প্রধান কিংবা যারা দেশ চালান তারা কখনোই কোনো কিছু যেকোনো মূল্যে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেন না।
প্রশ্ন: তাহলে কি বলতে পারি, সরকার বিদ্যুৎকেন্দ্রটি রামপাল থেকে সরিয়ে অন্য কোথাও নির্মাণের চিন্তা করছে? মন্ত্রী: দেশীয় ও আন্তর্জাতিক কোনো গবেষণাই এটি নির্দিষ্ট করে বলেনি যে, রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কারণে সুন্দরবনের কী ক্ষতি হবে। তারা বরং বলছে, এর ফলে সুন্দরবনের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। তারা সেজন্য কিছু নির্দেশনার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর জানতে চেয়েছে।
প্রশ্ন: কয়লা পরিবহনের জন্য বিশাল জাহাজ ও লাইটারেজ জাহাজ চলাচলের কারণে কি সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হবে না? মন্ত্রী: কয়লা আসবে রেলে।
প্রশ্ন: কিন্তু সরকারের ইআইএ রিপোর্টে তো বলা হয়নি যে কয়লা রেলপথে আনা হবে। বরং সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, কয়লা পরিবহনের কারণে পশুর নদী ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। মন্ত্রী: গবেষণা প্রতিবেদনগুলোতে প্রচলিত পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবহার করা হচ্ছে। একই সঙ্গে সরকার তার নিজের পথে কাজ করবে, যা শুধু প্রধানমন্ত্রী একাই জানেন। তিনি পুরো বিষয়টি নজর রাখছেন। আমি শুধু নিশ্চিত করে বলতে পারি, কয়লা আসবে রেলপথে।
প্রশ্ন: এখানে আরও উপায় রয়েছে। আমরা যদি কয়লা আমদানি করতে পারি, তাহলে তো বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য পরিবেশবান্ধব গ্যাসও আমদানি করা যায়। মন্ত্রী: মহেশখালীকে জ্বালানি কেন্দ্রে রূপান্তরের প্রক্রিয়া নিয়ে সরকারের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে হলে আপনাকে অবশ্যই জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে হবে। বর্তমানে আমরা যে অপরিশোধিত তেল আমদানি করি, সেটাও এই জ্বালানি কেন্দ্রের মাধ্যমে আনা হবে। সেখানে থেকে গ্যাসও আনা হবে। এখনো শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য গ্যাসের চাহিদা রয়েছে।
প্রশ্ন: রামপালের এই কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে প্রচুর বিষাক্ত গ্যাস সুন্দরবনের দিকে ছড়াবে। এ ছাড়া এখান থেকে ফ্লাই-অ্যাশ ও অনেক বিষাক্ত পদার্থ পশুর নদীতে যাবে, যা স্বাভাবিকভাবেই সুন্দরবনকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। মন্ত্রী: এ নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ে এরই মধ্যে আলোচনা হয়েছে। ফ্লাই-অ্যাশ কিন্তু আমাদের মাটির উর্বরতা বাড়াবে।
প্রশ্ন: সুন্দরবনকে ঘিরে প্রচুর শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। পরিবেশ মন্ত্রণালয় প্রায় ১৫০টি শিল্প ইউনিটকে অনুমোদন দিয়েছে। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রকে নজরে রেখেই এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। এসব প্রতিষ্ঠান কি সুন্দরবনের ক্ষতি করছে না? আপনার মন্ত্রণালয় এসব প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন দিল কী করে? মন্ত্রী: যাদের লাইন্সেসের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, আমরা তাদের লাইসেন্স নবায়নের সুযোগ দিচ্ছি না। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য প্রাপ্ত তহবিলের একটি অংশ এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে ব্যয় করা হচ্ছে, যেন প্রতিষ্ঠানের দক্ষতা বাড়িয়ে পরিবেশের ক্ষতি কমানো যায়।
প্রশ্ন: আপনি কি মনে করেন না বর্তমান প্রযুক্তি দিয়ে নির্মিত বিদ্যুৎকেন্দ্র সুন্দরবনের ক্ষতি করবে? মন্ত্রী: আপনি আমাকে এমন কোনো গবেষণা কিংবা তথ্য দেখাতে পারবেন যেখানে সুন্দরবনের ওপর এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে নির্দিষ্ট করে বলা হয়েছে? আমরা শুধু সুন্দরবনে এর প্রভাব পড়বে কি পড়বে না এই নিয়ে পরিমাপ করছি।
আমি আপনাকে নিশ্চিত করছি, প্রধানমন্ত্রী, যার পরিবার এই দেশের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছে, তিনি দেশের জন্য ক্ষতি হবে এমন কিছুই করবেন না। সেই সঙ্গে আমি তার (প্রধানমন্ত্রী) সঙ্গে কথা না বলেই আপনাকে এই নিশ্চয়তা দিলাম।
প্রশ্ন: যদি সেখানে ঝুঁকি থাকে তাহলে কী করা হবে? মন্ত্রী: এটি যে ক্ষতিকর সেই সম্পর্কে কোনো নির্দিষ্ট প্রমাণ নেই। যারা এই প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত তারা এখনো কোনো নির্দিষ্ট পয়েন্টে এসে পৌঁছায়নি।
প্রশ্ন: আমরা কেন ভারতের মতো আমাদের আইনে সংশোধন করছি না? ভারত যেমন পরিবর্তন করে নিয়েছে যে সুন্দরবনের ২৫ কিলোমিটারের মধ্যে এই ধরনের কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র নিমার্ণ করা যাবে না। মন্ত্রী: আপনি কি মনে করেন, সুন্দরবন ক্ষতিগ্রস্ত হলে শুধু বাংলাদেশ অংশে হবে, ভারতীয় অংশে হবে না? যদি ক্ষতিই হতো তাহলে ভারত কেন আমরাই এই প্রকল্পের পক্ষে সায় দিতাম না। কিন্তু আমাদের তো বিদ্যুতের প্রয়োজন রয়েছে। আমাদের যেমন পরিবেশ রক্ষা করতে হবে, তেমনি একই সঙ্গে উন্নয়নমূলক কর্মকা-ও করতে হবে।
প্রশ্ন: সুন্দরবনের কাছে কয়লার বদলে আমরা কি গ্যাসভিত্তিক কিংবা এ ধরনের অন্য কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করতে পারি না, যা কিনা কয়লার মতো ধোঁয়া ছড়াবে না? মন্ত্রী: আপনি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সুযোগ কেন বাদ দিচ্ছেন?
প্রশ্ন: কেন সুন্দরবনের কাছে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করতে হবে? অন্য কোথাও নয় কেন? মন্ত্রী: সন্দেহাতীতভাবে এটি এখনো প্রমাণিত হয়নি যে ওই স্থান ঝুঁকিপূর্ণ। যদি গবেষণার মাধ্যমে এটি প্রমাণিত হয় যে ওই স্থান ঝুঁকিপূর্ণ, তাহলে আমাদের সরকার-প্রধান অবশ্যই সেটি করবেন না। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিবেদনে সুনির্দিষ্টভাবে ঝুঁকির প্রমাণ মেলেনি।
প্রশ্ন: কিন্তু সাধারণ জনগণ তো সুন্দরবনের ক্ষতি নিয়ে শঙ্কিত। তাদের উদ্দেশ্যে আপনি কী বলবেন? মন্ত্রী: যদি সরকারের প্রতীতি হয় যে জনগণের ন্যায়সংগত উদ্বেগ রয়েছে, তখন সেটি করা হবে। এটা টেকনোক্র্যাট নয়, রাজনৈতিক সরকার। সুতরাং জনগণের সরকার জনগণের ভাষাতেই কথা বলবে।
প্রশ্ন: কেন বাংলাদেশ রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে আগ্রহ দেখাল? মন্ত্রী: আপনি কেন মনে করছেন বিদ্যুৎকেন্দ্র রামপালেই হবে? আপনি কেন এটি চিন্তা করছেন না যে, বিদ্যুৎকেন্দ্র অন্য কোথাও হতে পারে? যদি প্রমাণিত হয় যে রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র ক্ষতির কারণ হতে পারে, তাহলে আমি বিশ্বাস করি প্রধানমন্ত্রী এটি অবশ্যই হতে দেবেন না।
প্রশ্ন: ইউনেস্কোর উদ্বেগ সম্পর্কে আপনি কী বলবেন? মন্ত্রী: ইউনেস্কো এখনো এই বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করেনি। বরং পরিবেশের সঙ্গে জড়িত বিষয়ে কিছু পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে। ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে যে ব্যাংক এখানে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যদি এই প্রকল্পে ঝুঁকি থাকত তাহলে কি তারা এটি করত?
প্রশ্ন: শোনা যাচ্ছে, বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ভারত থেকে কয়লা আমদানি করা হবে। মন্ত্রী: ভারতীয় কয়লার মান ভালো নয়। ভারতের কয়লায় সালফার বেশি থাকে। তার চেয়ে ইন্দোনেশিয়ার কয়লার মান ভালো। দামও কম। আমরা সেখান থেকে কয়লা কিনব। এটি আমাদের সবার দেশ। আমাদের প্রজন্ম দেশের জন্য এবং দেশের মানুষের জন্য ক্ষতিকর এমন কিছুই করবে না, এই নিশ্চয়তা দিতে পারি।
প্রশ্ন: এই বিষয়ে কি পরিবেশ মন্ত্রণালয় কোনো গবেষণার উদ্যোগ নিয়েছে? মন্ত্রী: আমি যত দূর জানি- বিদ্যুৎ, পরিবেশ এবং নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় একসঙ্গে বসে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। এরপর আমরা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের মুখ্য সচিবের সঙ্গে বসেছিলাম। তিনি তিনজন মন্ত্রীর কথা শুনেছেন এবং সেই নোট প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দিয়েছেন।
যারা রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধিতা করছে তারা আসলে পরিবেশ ও দেশের কথা ভেবেই করছে। আমরা কিংবা আমাদের সরকার তাদের বিরুদ্ধে নয়। এখন পূর্ব পাকিস্তান, পশ্চিম পাকিস্তানের আমল নয়। এটা বাংলাদেশ এবং আমরা অবশ্যই সবাই মিলে একে গড়ে তুলব।
প্রশ্ন: ফ্লাই-অ্যাশের ব্যবস্থাপনা কীভাবে করবেন, যেগুলো পশুর নদীতে পড়বে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা? মন্ত্রী: মুন্সীগঞ্জে আপনি কীভাবে ব্যবস্থাপনা করবেন, যেখানে প্রতিটি বাড়িতে কাছের সিমেন্ট কারখানাগুলোর ফ্লাই-অ্যাশের সাদা স্তর পড়ে গেছে? কেউ কি আছে যিনি চান দেশের উন্নয়ন না হোক?
প্রশ্ন: আপনি কি মনে করেন, ভারতবিরোধিতার অবস্থান থেকেই এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধিতা হচ্ছে? মন্ত্রী: এর উত্তর ‘না’। তারা বাংলাদেশি এবং দেশপ্রেম থেকেই এই উদ্বেগ দেখাচ্ছে। আমি মনে করি না, বিদেশিরা তাদের অর্থ দিচ্ছে এবং তারা এমনটা করছে। আমাদের খোলা মনের হতে হবে। তারা কিংবা আমরা কেউই এই প্রকল্পের জন্য অন্য কোনো দেশের মাধ্যমে প্রভাবিত নই।
প্রশ্ন: যদি রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হয়, তাহলে বাংলাদেশ যে গ্লোবাল টাইগার কনফারেন্সে বাঘের সংখ্যা বাড়ানোর অঙ্গীকার করেছিল, সেটি কি আদৌ সম্ভব হবে? মন্ত্রী: এরই মধ্যে দুটি বাঘের শাবক জন্মেছে। লবণাক্ততা নিয়ে আমরা বেশি উদ্বিগ্ন। আমরা যদি সুন্দরবনে লবণাক্ততা দূর করতে না পারি তাহলে হরিণ ও বাঘ কিছুই বাঁচবে না। বাঘ তখন কোথায় যাবে? ভারতের সুন্দরবন অংশও লবণাক্ততায় আক্রান্ত।
প্রশ্ন: এখন মনে করা হচ্ছে, সরকার অবশ্যই এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে, যেহেতু বিএনপি রামপালবিরোধীদের সঙ্গে নিয়ে এর বিরোধিতা করছে। মন্ত্রী: প্রথম কথা হলো, সরকার এই বিষয়টি ব্যক্তিগতভাবে দেখছে না। কোনো একজনের অবস্থান কিংবা কার্যকলাপের কারণে প্রধানমন্ত্রী আবেগতাড়িত হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন না।